পিত্তথলী কাজ না করলে হজমে বিশৃঙ্গলা দেখা দেয়, কিডনী তার কাজ না করলে শরীরের তরল বর্জ্য পদার্থ
ঠিকমত নির্গত হতে পারে না। মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে যায়। এখানে আমরা কিডনীর রোগ
কিডনী পাথর নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব।
কিডনী পাথর একটি বিশেষ রোগ, যখন মূত্রে
বিশেষ ধরনের কতকগুলো উপাদান কিডনী অথবা উহার পেলভিসে জমা হয়ে আস্তে আস্তে কঠিন
পদার্থে পরিনত হয়ে পাথরের সৃষ্টি করে তখন উহাকে কিডনী পাথর বলা হয়। কিডনী বিকল হওয়ার
অনত্যম কারন এই কিডনী পাথর।
এই কিডনী পাথর চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিভিন্ন নামে পরিচিত।
যেমন- রেনাল কলিক (Renal Colic) রেনাল ক্যালকিউলাস (Renl Calculus) রেনাল ক্যালকিউলাই ( Renal Calculi)
কিডনী পাথর (Stone in the kidney) গনকলের কিডনী ( Gnauel in the Kidney )
নেফ্রোলিথিয়াসিস ( Nephrolitheasis) রেনাল স্টোন ( Renal stone) নেফ্রোক্যালসিনেসিস (Nephrocalsinesis)
কিডনীতে পাথর হওয়ার সম্ভাব্য কারণসমূহ নিমরুপ
মায়াজমেটিক কারণ : সোরা , সাইকোসিস .
আনুসাঙ্গিক কারণ :
পেশাগত কারণ : এমন কাজ করার প্রয়োজন হয় যেখানে অত্যধিক ঘামের ফলে অতিরিক্ত পানি হ্রাস পায়।
আবহাওয়া : এমন আবহাওয়া বা পরিবেশের মধ্যে বসবাস করা যার ফলে প্রস্রাবের পরিমাণ হ্রাস পায়। এর ফলে প্রসাবের
উপাদানসমূহের গাঢ়ত্ব অত্যাধিক বেড়ে গিয়ে কিডনীতে কঠিন পদার্থের সৃষ্টি হয়।
ইউরিনারী ইনফেকশন : প্রতিবন্ধতা সৃষ্টি হয় এবং আবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
মূত্রে ক্যালসিয়ামের আধিক্যতাঃ- ১) অতিরিক্ত পরিমানে পানি এবং দুধ পান করলে। ২) দীর্ঘদিন যাবৎ বিছানায় শুয়ে থাকলে।
৩) প্যারাথাইরয়েড গ্ল্যান্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে। ৪) এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে। ৫) ভিটামিন ডি অতিরিক্ত গ্রহন করলে।
বিভিন্ন রোগঃ - ১) সিসটিন ইউরিয়া। ২) প্রাইমারী হাইপার অক্সাল ইউরিয়া। ৩)প্রস্রাবে ইউরিক এসিড নির্গত হওয়া।
৪) গাউট নিউমোনিয়া। ৫) ভিটামিনের অভাব।
রেনাল কলিকের প্রকারভেদ ঃ
১) অক্সালিক স্টোন ( Oxalate Calculus) ২) ফসফেট স্টোন ( Phosphate Calculus), ৩) ইউরিক অ্যাসিড
এবং ইউরেট স্টোন (Uric Acid & Urate Calculus ), ৪) সিসটিন স্টোন ( Cystine Calculi), ৫) জ্যানাথাইন
ক্যালকুলাস (Xanthine calculi) .
বৈশিষ্ট্য :
অক্সালিক স্টোন ( Oxalate Calculus) - ১) এটি সাধারনত একটি হয়। ২) বাইরের দিকে কাঁটা কাঁটা বা মসৃন থাকে।
৩) স্টোনের স্থান সাদা দেখা যাবে। ৪) আলট্রাসনোগ্রাম এ এটি কাল দেখা যাবে । ৫) এটি খুব শক্ত থাকে, ৬) এটি খুব দ্রুত প্রকাশ পায়। ৭) প্রস্রাবে কোন দুষিত পদার্থ থাকে না।
ফসফেট স্টোন ( Phosphate Calculus):- ১) এটি ক্যালসিয়াম ফসফেট বা ক্যালসিয়াম এমোনিয়াম অথবা ম্যাগনেসিয়াম ফসফেট দ্বারা গঠিত।
২) এটি মসৃণ ও সাদা রঙ এর হয়। ৩) এর লক্ষ্ণ গুলো দেরিতে প্রকাশ পায়। ৪) প্রস্রাবে সেপটিক ইউরিয়া পাওয়া যাবে।
ইউরিক অ্যাসিড এবং ইউরেট স্টোন (Uric Acid & Urate Calculus):- ১) এটি শক্ত হয়ে থাকে। ২) এটি মসৃণ হয়ে থাকে। ৩) এটি হলুদ বা লালচে বাদামী বর্ণের হয়ে থাকে।
সিসটিন স্টোন ( Cystine Calculi): -* এটি নরম থাকে। * গোলাপি অথবা হলুদ বর্ণের হয়।
জ্যানাথাইন ক্যালকুলাস (Xanthaine calculi): -এটি এক প্রকার যৌগবিশেষ, যা শরীরের অধিকাংশ টিস্যু ও তরলের মধ্যে পাওয়া যায়।
ক্লিনিক্যাল ফিচার -
* কিডনি রিজিয়নে ব্যাথা প্রকাশ পায়। *
সাধারণত ব্যাথা হঠাৎ আরম্ভ হয়। * ব্যাথা কুঁচকির চারদিকে সঞ্চারিত হয়
এবং কখনও কখনও টেসটিসে অথবা লিবিয়ায় অথবা উরুর ভেতরের সাইডে ছড়িয়ে পড়ে। * ব্যাথা ক্রমে
বেড়ে গিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে তীব্রতর অবস্থায় পৌছে। * যদি চিকিৎসা না করা হয়, সাধারণত ২ ঘন্টার
মধ্যে ব্যাথা এমনিতে থেমে যায়। * মাঝে মাঝে ব্যাথা কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত চলতে পারে। *
কিছু কিছু রোগী আছেন যাদের সবিরাম প্রকৃতির তীব্রতর ব্যাথা কয়েক দিন যাবৎ প্রতি মিনিটে মিনিটে
আসা-যাওয়া করে। * ব্যাথার সঙ্গে বমি বা বমি বমি ভাব থাকতে পারে। * রোগী অস্থির প্রকৃতির। ব্যাথা থেকে
পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য শয্যায় বা কক্ষের মধ্যে তার দেহকে বিভিন্ন ভাবে পরিবর্তন করে ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। *
রোগীর চেহারা বিবর্ণ হয়ে যায়। * রোগীর ঘর্ম স্রাব হয়। * রোগী যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে পড়ে। * প্রস্রাবের সঙ্গে
রক্ত এবং পুঁজ দেখা যেতে পারে। (Haematuria and pyuria) * ৭৫% কেসে বিলম্বে ব্যাথা প্রকাশ
পায়। (Leading symptom in 75% Case)
Investigation :
* Urine for R/M/E :- প্রস্রাবে পিএইচ মাত্রা যদি ৪.৮ এর চেয়ে কম হয় তাহলে প্রস্রাব এসিডিক ও কিডনী পাথর এর উপস্থিতি নির্দেশ করে (Acidic pH (less than 4.8) of urine is an indication of kidney stones.)
* X-Ray of the KUB region (Shows kidney,
Ureter and bladder): এই পরীক্ষায় প্রাথমিক ভাবে কিডনী, ইউরেটার ও মুত্রথলীতে পাথরের আকার, শেপ এবং অবস্থান সমন্ধে ধারণা পাওয়া যায়। কিডনী বা মুত্রথলীতে পাথর এর প্রবাহ / সম্ভাবনা নোট করা যায়।
* Intra venaus Pylogram (IVP):- একটি ইন্ট্রাভেনাস পাইলোগ্রাম ( IVP ), যাকে ইন্ট্রাভেনাস ইউরোগ্রাম ( IVU )ও বলা হয়, একটি রেডিওলজিক্যাল পদ্ধতি যা কিডনি , মূত্রনালী এবং মূত্রাশয় সহ মূত্রতন্ত্রের অস্বাভাবিকতা কল্পনা করতে ব্যবহৃত হয় । একটি কিডনি, মূত্রনালী এবং মূত্রাশয়ের এক্স-রে (KUB),
যা একটি সমতল (অর্থাৎ, ননকন্ট্রাস্ট) রেডিওগ্রাফের বিপরীতে, একটি IVP মূত্রনালীর হাইলাইট করার জন্য বৈসাদৃশ্য ব্যবহার করে ।
* Blood for Urea :- ব্লাড ফর ইউরিয়া- এটা দেখায় যে রক্তে কি পরিমাণ ইউরিয়া বা ইউরিক এসিড আছে যা কিডনি পাথর এর উপস্থিতি নির্দেশ করে।
* Ultrasonogram of KUB: আল্ট্রাসনোগ্রাম বা ইমেজিংঃ- এর মাধ্যমে কিডনী, মুত্রনালী ও মুত্রথলী এর ছবি স্ক্যান করে এর সার্বিক চিত্র দেখা হয়।
* Serum Createnine : সিরাম ক্রিয়েটিনিন লেভেল বেড়ে গেলে কিডনী পাথর এর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
* Serum Electrolytes: সিরাম ইলেক্ট্রোলাইট আয়ন (যেমন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, ক্লোরাইড এবং পটাসিয়াম) প্রস্রাবের পাথর গঠনে অবদান রাখতে পারে।
* Serum Calcium: এটা দেখায় যে, যদিও আপনার সিরাম ক্যালসিয়াম এর লেভেল স্বাভাবিক, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আপনার হাইপারথাইরয়েডিজম হয়েছে।
জটিলতা (Complication)ঃ
* হাইড্রোনেফ্রোসিস (Hydronephrosis) বা কিডনির শোথ।
* সিসটাইটিস (Cystitis) বা মূত্রথলির প্রদাহ।
* হাইড্রোইউরেটার (Hydroureter) বা প্রস্রাব জমা হওয়ার ফলে ইউরেটারের স্ফীতি।
* পায়েলাইটিস (Pyelitis) বা বৃক্কীয় বস্তির প্রদাহ বা রেনাল পেলভিসের প্রদাহ।
* পাইলোনেফ্রাইটিস (Pyelonephritis) বা কিডনি ও রেনাল পেলভিসের প্রদাহ।
* ইউরেটারিক স্ট্রিকচার (Uretaric Stricture).
* ব্লাডি ইউরিন (Bloody Urine) বা প্রস্রাবে রক্ত থাকা।
* রিটেনশন অব ইউরিন (Retention of urine) বা মূত্র রোধ ।
* রেনাল ফেইলোর (Renal Failure)
* ইনফেকশন (Infection)।
ভাবীফল (Prognosis):
যদি চিকিৎসা যথোপযুক্ত হয় তবে রোগীর জীবন ভালোভাবে কেটে যাবে। কিডনি পাথর বের হওয়ার সময় ব্যাথা হতে পারে। এমনকি পাথর নির্গত হওয়ার পরও নতুন
পাথর সৃষ্টি হতে পারে এবং ব্যাথা হওয়ার সম্ভাবনা সবসময় থেকে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাথর দীর্ঘদিন থাকার ফলে ইনফেকশন হয়ে ক্যানসার হতে দেখা যায় এবং রোগীর মৃত্যুও ঘটতে পারে।
ব্যবস্থাপনা (Management):
মেডিসিন (Medicine): ক্যান্থারিস, বার্বারিস ভালগ্যারিস, সার্সাপেরিলা,
বেলাডোনা, ক্যালকেরিয়া কার্বনিকাম, স্ট্যাফিসেগ্রিয়া, এপিস মেলিফিকা, লাইকোপোডিয়াম
ক্লাভেটাম, বেনজয়িক অ্যাসিড, প্যারিরা ব্রোভা, লিথিয়াম কার্ব, ট্রাইবুলাস টেরিস্টোরিস ইত্যাদি সহ যে কোনো ওষুধ লক্ষণ
সাদৃশ্য ব্যবহার করা যায়।
কিডনীর পীড়ার কিছু ঔষধ সমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণী
1.Berberis Vulgaris:
এই পীড়ার সাথে কোমড়ের ভয়ানক ব্যথা, কি শুলে,কি বসলে,সকল সময়ে ব্যাথা বাড়ে, বেদনা সকালে অত্যন্ত বেশি এবং তা কখনও কখনও কোমড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে ।কিডনির প্রদেশে বুজ বুজ করে, মূত্রথলী হইতে মূত্রনালী পর্যন্ত ব্যথা, প্রসাবে জ্বালা।
2.Hedeoma pulegoides:
কিডনী থেকে মূত্রথলী পর্যন্ত খামচে ধরা, টেনে ধরার মত বেদনা,বাম ইউরেটারে বেদনা,বাম কিডনির উপরে বেদনা ও জ্বালা।
3. Merc-sol:
পিঠের দিকে কোমড়ের দুই পার্শ্বে তীব্র বেদনা, যন্ত্রণা, বারবার প্রস্রাবের ইচ্ছা,স্বল্প প্রসাব বা প্রসাবের সময় কোথনি, বেগ, রক্তপূজ সহ প্রস্রাব, শ্লেষ্মা নির্গমন, বমি, কাঁপুনি দিয়ে দিয়া জ্বর।
4.Acid-picricum:
যেখানে প্রসাবে ফসফেট, ইউরিক এসিড,এলবুমেন ও সুগার এর উপস্থিতি থাকে, রোগী ক্রমশঃদুর্বল হয়ে পড়ে, সেখানে এসিড পিক্রিক উপকারী।
5.Cantharis:
ক্যান্থারিসের প্রধান চরিত্রগত লক্ষণ হল প্রসাবে অত্যান্ত জ্বালা-পোড়া, বেগ, কুন্থণ। প্রস্রাব ত্যাগের সময় কেটে ফেলার যন্ত্রনা ইত্যাদি। প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষায় ESR, Epithelial Cell, Pus-Cell এর বৃদ্ধি লক্ষ্ণীয়।
6.Pareira brava:
প্রসাবের তলানি ঘোলাটে, বেদনা কেবল মাত্র পাছা পর্যন্ত নামে। যন্ত্রণার জন্য রোগী হামাগুড়ি দিয়ে বসে,বেগ কুন্থণ । প্রস্রাবের পর খুব বেশি করে ফোঁটা ফোঁটা প্রসাব পড়ে । প্রসাবে লিথিক এসিড ও রক্ত থাকে।
7.Uva ursi:
মূত্রনালীতে পাথর থাকার জন্য প্রদাহ। প্রসাব ত্যাগের সময় হঠাৎ বন্ধ হয়, যেন পাথরীটা আটকে গেল। এতে প্রস্রাব সুতার মত দেখায়।
8.Terebinthina oleum:
রক্তপ্রসাব কিম্বা প্রসাবের সঙ্গে রক্ত মিশ্রিত থাকলে এর দ্বারা বেশি উপকার হয়।
9.Opium:
মূত্রশূল কিম্বা কিডনির পীড়ায় অত্যন্ত রক্তস্রাব।
10.Ipomia purpurea:
কিডনীর পীড়ায় প্রবল বেদনার সময়ে অত্যন্ত গা বমি -বমি থাকলে এবং একদিকে কিডনির বেদনা অন্য দিকে মূত্রনালী পর্যন্ত ছড়িয়ে গেলে উপকারী।
11.Sarsaparilla :
প্রসাবের ঘন ঘন বেগ,অল্প অল্প প্রসাব,প্রসাব সহ ছোট ছোট পাথর পাথরী নির্গমন, কিডনিতে বেদনা। শিশু প্রসাবের সময় কাঁদলে, বসলে ফোঁটায় ফোঁটায় প্রসাব বের হয়। পাথরী বড় হইলেও এই ঔষধে বের হয়ে যায়।
12.Belladonna :
শরীরাভ্যন্তরস্থ কিডনি, লিভার, ফুসফুস, প্লীহা, হার্ট ইত্যাদি যন্ত্রনায় বিশেষ উপকার। বেলাডোনার চরিত্রগত লক্ষ্ণ মনে রাখতে হবে (দ্রুত, লালচে, গরম, স্পর্শকাতর)।
13. Calcaria carb:
মূত্রপাথরী ও পিত্ত পাথরী এই উভয় প্রকারের পীড়াতে বেশ উপকারী। ভয়ানক ব্যাথা করার সময় ঔষধের ৩০ শক্তি, উপকার না হইল ২০০ শক্তি ২/১ মাত্রায় সেবন করিলে শীঘ্রই উপকার হয়। ক্যালকেরিয়া -পাথরী পীড়ার একটি প্রতিষেধক ঔষধ। ( এটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক ঔষধ, বয়সের ইতিহাস- মাথার ঘামে বালিশ ভেজা, হাটা দেরীতে হওয়া, নাদুস-নুদুস থলথলে স্বাস্থ , দাত উঠতে দেরী হওয়া ইত্যাদি , বংশগত টিউবারকুলার ইতিহাস থাকতে পারে।)
14. Silicea:
প্রসাব ঘোলাটে, তলানিতে লাল কিম্বা হলদে গুঁড়োমত পড়ে। এটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক ঔষধ, হাত-পা এর তালু ঘামে বা এর ইতিহাস থাকতে পারে, স্বপ্নে- বোবায় ধরে, মানসিকতা- কম সাহসী, কোন কাজ শুরু করতে ভয় পায় কিন্তু সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করে। রক্ত সহ্য করতে পারে না। সুচ- ধারালো ছুরি দেখলে আত্মহত্যার ইচ্ছা জাগে। অনেক রোগী ইঞ্জেকশন এর কথা শুনলেই ভয়ে দৌর দেয়।
15. Staphisagria:
রাত্রে কোমড়ে বেদনা বৃদ্ধি। প্রসাব করার সময় নয়,অন্য সময় মূত্রনালীতে জ্বালা। প্রসাব ত্যাগ কালে জ্বালার উপশম।
16. Lycopodium:
মূত্রপাথরীতে ডান দিকের কিডনির দিক থেকে বেদনা আরম্ভ হয়, সেই বেদনা প্রসাব দ্বার পর্যন্ত ক্রমশঃ পরিচালনা হলে বা নিচের দিকে - এমন কি পা পর্যন্ত পরিচালিত হলে লাইকোপোডিয়াম উপযোগী। আবার উক্ত লক্ষণে বাম দিকে বেদনা হলেও উপোযোগী।
17. Apis melifuce:
প্রসাব ত্যাগের সময় মূত্রনালীর মধ্যে অত্যন্ত জ্বালা ও হুলফোটানে ব্যথা, ঘনঘন প্রসাবের বেগ। কিন্তু ২/১ ফোটা নির্গত হয়, প্রসাবের বেগ আসলে রোগী ১ মিনিট ও ধরে রাখতে পারে না। জ্বালা যন্ত্রণার সাথে রক্তস্রাব, প্রস্রাব স্বল্পতা, ব্রাইটস ডিজিজ।
18. Lithium caronicum:
প্রসাব ঘোলাটে, সাথে শ্লেষ্মা ও লালবর্ণযুক্ত একপ্রকার পদার্থের তলানী, ডান কিডনিতে বেদনা, প্রসাবের সময় বুকে চাপ পড়ে, পুরাতন ও নাতি প্রবণ সিষ্টাইটীস, এর আর একটি লক্ষণ- রোগী ল্যাকেসিস মত সামান্য চাপও সহ্য করতে পারে না।
19. Acid Benzoicum, Acid Nit:
ঘোড়ার প্রসাবের মত প্রসাবে দুর্গন্ধ, অসাড়ে প্রসাব ত্যাগ, (এসিড বেঞ্জয়িক- প্রস্রাব গরম/ এসিড নাইট্রিক- প্রস্রাব ঠান্ডা), বিশেষ উপযোগী। তবে এই প্রসাবে তলানি পড়ে না।
20. Carica papaya:
প্রসাব পীড়ায় সকালে প্রথম প্রসাবের সময় বেশি বেগ দিয়ে প্রসাব করতে হয়। বোধ হয় যেন ভিতরে কিছু আটকে আছে। প্রসাবের বেগ সহ মূত্রনালীতে ও কিডনিতে বেদনা,প্রসাবের সময় এবং প্রসাবের পর জ্বালা, ঘন ঘন প্রসাবের বেগ থাকে। পেরিনয়ম বা মলদ্বারের উপরের স্থান হতে লিঙ্গ পর্যন্ত ভীষণ ব্যথা। মনে হয় একটা বস্তু তীব্র বেগে বের হওয়ার চেষ্টা করছে। বাম অন্ডকোষ বেদনা হয়।
উপদেশ (Advice):
করনীয় - * যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে বিশ্রামে যেতে হবে। * রোগীকে তরল খাবার দিতে হবে,
প্রতিদিন ৪ লিটার বা এর অধিক। * ব্যাথাযুক্ত স্থানে গরম স্যাঁক দিতে হবে। * যখন তীব্র প্রকৃতির
ব্যাথা হয় এবং ব্যাথাটা বারবার প্রত্যাবর্তন করে তখন ক্যাথিটার প্রবেশ করাতে হবে।
নিষেধ ( Should Not Do):
ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্টোনের ক্ষেত্রে - * মিষ্টি জাতীয় ফল * বরই
* পালংশাক * এ্যাসপ্যারাগাস। * দুধ জাতীয় খাদ্য।
ইউরিক এসিড বা ইউরেট স্টোনের ক্ষেত্রে - * লাল প্রকৃতির মাংস,
যেমন গরুর মাংস। * মাছ ও মাছের ডিম।
সিস্টিন স্টোনের ক্ষেত্রে - * মাছ, মাংস, ডিম
পথ্য - স্বাভাবিক খাবার দিতে হবে।
সার্জিক্যাল চিকিৎসা- যদি লক্ষনসদৃশ চিকিৎসা ব্যর্থ হয় এবং পাথরের ব্যাস ৪
সে.মি. এর বেশী হয় তাহলে সার্জিক্যাল চিকিৎসা করতে হবে। পাথরের ব্যাস ৪ সে.মি এর মধ্যে
হয় তাহলে ৯০% পাথর আপনা আপনি বের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আদর্শ আরোগ্য এবং পাথর হওয়ার
প্রবনতা প্রতিরোধ করার জন্য সার্জিক্যাল চিকিৎসার পর অবশ্যই রক্ষনশীল চিকিৎসা করতে হবে।
অনেকেরই ধারনা কিডনী পাথর হলে অপারেশন ছাড়া ভাল হয় না। কিন্তু হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায়
আরোগ্য লাভ করেছেতার কতিপয় রোগীর রোগ বিবরন এবং তাদের কিডনী হতে বের হওয়া পাথরের
চিত্র নিম্নে তুলে ধরার চেষ্টা করছি
কিডনি পাথর চিকিৎসায় সফলতাঃ -
12-9-2023: SM ID 7284:-
প্রধান সমস্যা: কিডনিতে পাথর, ৭ মাস যাবৎ, কোমরে ব্যাথা ও জ্বালা করে, ডান তলপেটে ব্যথা
মানসিক অবস্থা: রাগী স্বভাব, রোগের কারণে মৃত্যু ভয়। ভুতের ভয়, ঝড়ের ভয়। খাদ্য: লবন প্রিয় ছিল, মিষ্টি -অপ্রিয়, দুধ সহ্য হয় না, পিপাসা কম। আবহাওয়া কাতরতা: শীতকাতুরে, ঠান্ডা সহ্য করতে পারে না।
প্রস্রাব: জ্বালা করে প্রস্রাবের সময়, পানি বেশি করে পান করলে জ্বালা করে না, রঙ -হলুদ। মল: স্বাভাবিক।
Clinical Report: [Sonar Bangla Clinic & Hospital, Mymenshing Road, Tangail- ]
Date: 13 July 2023- " Kidnes are normal in size, shape and position
with well-defined cortices, medulla and sinuses.
7.9 mm stone seen in the right pelviureteric junction with mild pelvicalyceal dialation.
8.7 mm stone seen in the lower pole of left kidney."
[Date- 3 september 2023] " Kidnes are normal in size, shape and position with well-defined. cortices, medulla and sinuses.
8.9 mm stone seen in the right pelviureteric junciton with mild pelvicalyceal dilatation.
9.8 mm stone seen in the lower pole of left kidney."
রোগী আমাদের চেম্বারে ১২ অক্টোবর ২০২৩ ইং এ আমাদের চেম্বারে উপরোক্ত লক্ষ্ণাবলী নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন। রোগিলিপি করার পর উনাকে Tuberculinum Bovinum 1m, ৭ দিন পর Lycopodium clavetum 200 পরিবর্তনশীল পদ্ধতিতে সেবন করতে দিয়ে ১৫ দিন পর সাক্ষাত করতে বলি।
এরপর লক্ষ্ণানুযায়ী 15-10--23: Lycopodium 1m, 30-1-2023: Sarsaperilla 200 নিয়মানুযায়ী সেবন করতে দেয়া হয়। পরবর্তীতে Test করতে দিলে নিম্নোক্ত রিপোর্ট আসে-
[Sonia Nursing Home, New Busterminal, Tangail; Receipt No: 420231200786, Date: 14 Dec 2023] "
Kidneys: Both kidneys are normal in size, shape & Position. Cortical echogenicity is normal. Cortico-medullary differentiation is well. Pelvicalyceal systems of both kidneys are not dilated.
No calculas or mass is seen."
Urinary bladder: - Well filled & regular in outline.
A bright echogenic structure (08 mm) is noted in U.B.
Adnexa:- A small Cystic lesion measuring about 25X25 mm is noted in left adnexa."
28-12-2-2023: কোমর প্রদেশে প্রচন্ড জ্বালা, Sarsaperilla 1m দিয়ে দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য- প্রতিবার Burberis Vulgeris θ ২০ ফোটা মাত্রায় দিনে ২ বার খানা খাবার পর সেবন করতে দেয়া হয়।
২. SM ID 7423: Admit dt: 17-12-2023 ;
প্রধান সমস্যা:
১. ডান কিডনিতে পাথর, ব্যথা করে, ২. প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন আছে- ৭ মাস যাবৎ। প্রস্রাবের রাস্তায় চিরিক মারা ব্যথা। ৩. BP 160/80 ৪. ডান কোমরে টিউমার, গলায় গয়টার (ঘ্যাঘ) আছে। বংশগত রোগ ইতিহাস: শাশুড়ীর টিউমার ছিল। আবহাওয়া কাতরতা: উভয় কাতর। খাদ্য: দুধ সহ্য হয় না, ডিম - অপ্রিয়। পিপাসা: প্রচুর পরিমানে পানি পান করে। মল: স্বাভাবিক। প্রস্রাব - জ্বালা আছে।
রোগী আমাদের চেম্বারে ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং এ আমাদের চেম্বারে উপরোক্ত লক্ষ্ণাবলী নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন। রোগিলিপি করার পর উনাকে বিভিন্ন সময় লক্ষ্মণ অনুযায়ী বিভিন্ন হোমিওপ্যাথি ঔষধ নিয়মানুযায়ী সেবন করতে দেয়া হয়। পরবর্তীতে Test করতে দিলে নিম্নোক্ত রিপোর্ট আসে-
USG Report: Normal Study. Dt: 23-5-2024. Seba Hospital, Tangail.
-
Dr. Md. Al Mamun
DHMS (FHMCH), Dhaka
BHMEC Reg: 36663.
Chember:
SM Homeopathy Medical Center , Potol Bazar, Tangail
অন্যান্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক এর সফলতা
Case History-1 (ID No- ESS-12605) ঠিকানাঃ ৪৬/১, মানিটোলা, বংশাল , ঢাকা। ১৫/০৯/২০১০ইং তারিখে চিকিৎসার জন্য আমার কাছে আসেন। কেস রেকর্ড নিয়ে এবং
পর্যবেক্ষন করে পেলাম প্রায় ১ মাস পূর্বে আল্ট্রসনোগ্রাম পরীক্ষায় ডান কিডনীতে পাথর
((Right Renal Calculi) এর জন্য কষ্ট পাচ্ছেন। এর সাথে রোগীর পেটের ডান পার্শ্বে মাঝে মধ্যে
ব্যাথা হয়। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া করে। আগুনে পুড়ে যাওয়ার মত জ্বালা। জ্বালা প্রস্রাবের আগে,
পরে এবং মূত্রত্যাগকালে বৃদ্ধি পায়। প্রস্রাবের শেষে ফোঁটা ফোঁটা মূত্র নির্গত হয়, বেগ
চেপে রাখতে পারে না ইত্যদি লক্ষনগুলো Cantharis m/2 প্রতিদিন সকালে নিয়মানুযায়ী সেবন
করতে বলে ৮ দিন পর আসতে বলি। ২৬-০৯-২০১০ তারিখে রোগী দেখা করেন এবং বলেন কিছুটা ভাল
লাগছে, এমনিভাবে ২৬-১০-২০১০ হতে Cantharis m/3, m/4, m/5
ইত্যাদি প্রয়োগ করার পর রোগী এসে বলে প্রস্রাবের সাথে একটি পাথর বের হয়েছে এবং
পাথরটি তিনি নিয়ে আসেন।
এরপর ০৩-১১-২০১০ইং তারিখে Cantharis/6 দিয়ে দেই এবং তারপর থেকে রোগী সুস্থ্য আছেন।
Case History-2 (ID No ESS-13989) ঠিকানা- থানাঃ পাথরঘাটা, জেলাঃ বরগুনা।রোগী
আমার কাছে চিকিৎসার জন্য আসেন ০১-১০-২০১০ তারিখে। কেস রেকর্ড নিয়ে ও পর্যবেক্ষন
করে দেখি ডান কিডনীতে ছোট পাথর দেখা যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে ব্যাথা করে। আল্ট্রাসনোগ্রাম
রিপোর্টে ডান কিডনীতে পাথর দেখা যায়। মাথায়, কানে, অন্যস্থানে আঁচিল আছে। প্রস্রাব
ঘনঘন হয়। যৌন দুর্বলতা, স্থায়ীত্ব কম ইত্যাদি। লক্ষনগুলি পর্যবেক্ষন করে Thuja OC এর সাথে সাদৃশ্য
পেয়ে ০১/১০/১০ইং তারিখে রোগীকে Thuja-m/2 প্রতিদিন সকালে নিয়মানুযায়ী সেবন করতে
বলে ৮দিবে পর সাক্ষাৎ করতে বলি। ১২-১১-২০১০ইং তারিখে আসে এবং আমার চেম্বারের বাথারুমে
প্রস্রাব করার সময় একটি পাথর নির্গত হয়। তিনি পাথরটি আমার কাছে নিয়ে আসেন। ঐদিন
Thuja-m/3 m/4 দিয়ে দেই। তারপর থেকে রোগী ভালা আছেন।
Case History-3 (Id No ESS-1805): ঠিকানা - বনশ্রী, রামপুরা,
খিলগাঁও, ঢাকা। রোগী ২৭/১২/২০০৯ইং তারিখে চিকিৎসার জন্য আমার চেম্বারে আসেন। কেস
রেকর্ড নিয়ে ও পর্যবেক্ষন করে দেখি কিডনী পাথর হওয়ার পর অপারেশন করা হয়। পরে মূত্রথলিতেও পাথর
জমে এর সাথে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া। আগুনে পুড়ে যাওয়ার মত জ্বালা। জ্বালা প্রস্রাবের আগে,
পরে এবং মূত্র ত্যাগকালে বৃদ্ধি পায়। প্রস্রাব শেষের দিকে ফোঁটা ফোঁটা নির্গত হয়। এই
লক্ষনগুলি পর্যবেক্ষন করে Cantharis এর সাদৃশ্য বুঝতে পেরে রোগীকে ঐদিন Cantharis m/2
প্রতিদিন সকালে খালিপেটে নিয়মানুযায়ী সেবন করতে বলে ৮ দিন এর মেডিসিন দিয়ে দেই।
৯-১-২০১০ ইং তারিখে রোগী দেখা করেন এবং ভাল আছে বলে জানান। ঐদিন পুনরায় তাকে
Cantharis m/3 দিয়ে ৮ দিন পরে দেখা করার জন্য বলি। পরবর্তীতে ২৫-০৪-২০১০ইং তারিখে রোগী
পাথর নিয়ে চেম্বারে আসেন। সেদিন রোগীকে Cantharis m/4 দিয়ে দেই। তারপর এই রোগী আরও
বেশ কয়েকজন রোগী নিয়ে আমার চেম্বারে আসেন তখন জানতে পারি রোগী এখন সুস্থ আছেন।
Case Histry-4 (ID No ESS-5872): গ্রামঃ দিঘীপাড়, পোঃ গায়গয়, থানাঃ নিয়ামতপুর, জেলা - নওগাঁ। ২৭-০৩-২০১০ইং তারিখে
এই রোগী আমার চেম্বারে চিকিৎসার জন্য আসেন। রোগীলিপি পর্যালোচনা করে দেখতে পাই।
রোগীর ১২ বছর হতে কিডনীর সমস্যা। কিডনীতে পাথর আছে। তবে গত ৫দিন পূর্বে ৭মাসের
গর্ভে থাকা বাচ্চা মারা যায়। বর্তমানে রোগীর একটি কিডনী সম্পূর্ণ ও অপরটি আংশিক
অকেজো হয়ে গেছে। বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে জানতে পারি। রোগীর
আত্মীয় এবং সাথীরা জানায় রোগীর পেটে ব্যাথা, ক্যাথিটার দিয়ে প্রস্রাব করানো হচ্ছে।
প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে হলদে স্রাব বের হচ্ছে। রোগী অত্যন্ত দুর্বল, কম্প দিয়ে জ্বর আসে, কোন
কথা বলতে পারে না। মুখে মাংস পঁচার মত দুর্গন্ধ। মাংসপঁচার মত দুর্গন্ধযুক্ত প্রদরস্রাব
নির্গত হয়। প্রভৃতি লক্ষনগুলি Pyrogenium এর সাদৃশ্য হওয়ার রোগীকে Pyrogenium m/2
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিয়মানুযায়ী সেবন করতে বলে ৮ দিন পরে আসতে বলে দিই । ১০-
০৪-২০১০ তারিখে রোগী দেখা করেন এবং ভাল আছেন বলে জানান। তখন রেগীকে চPyrogenium m/5, m/6, m/7,
দিই। পরবর্তীতে ১০-০৬-২০১০ তারিখে রোগী হাতে করে একটি পাথর চেম্বারে
নিয়ে আসেন এবং জানান প্রস্রাবের সাথে পাথরটি বের হয়েছে। ঐদিন আবাার Pyrogernium m/9 m/10 m/11 m/12 দিয়ে দিই, এরপর ০৯-০৮-২০১০ তারিখে রোগী আসেন এবং সুস্থ্য আছেন
বলে জানান। তখন তাকে পুনরায় Pyrogenium m/13 m/14 m/15 m/16 পর্যন্ত দিয়ে দেই। বর্তমানে
রোগী সুস্থ আছে বলে জানতে পাই।
আধুনিক বিশ্বে চিকিৎসা ব্যবস্থায় রোগীর সুস্থতার
সাথে তার স্বাস্থ্য নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। বাস্তবতায় দেখা যায় চিকিৎসাকালীন
হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত সংক্রমন ও ঝুঁকির যে চিত্র তা ভয়াবহ এবং বিভিন্ন অপারেশনের পর যে
জটিলতা তা আরও বিপদজনক। কেননা আমার ক্ষুদ্র চিকিৎসা জীবনে অপারেশন পরবর্তী যে
ভয়াবহতা দেখছি তা সত্যিকার অর্থেই অনাকাঙ্খিত।রোগীর স্বাস্থ্য পরিচর্যায় যারা জড়িত
তারাও বাড়তি ঝুঁকিতে থাকেন। রোগীর পাশাপাশি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে কর্মরত
চিকিৎসক ও সহকারীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। কঠোরভাবে মেনে
চলতে হবে। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও জীবানুমুক্ত থাকার সচেতনতামূলক নিয়মাবলী, প্রয়োজনীয়
ক্ষেত্রে নিতে হবে আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা। পোশাক, গ্ল্যাবস পরিধান প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত
গাউন, মাস্ক, ক্যাপ ব্যবহার করতে হবে সতর্কভাবে। নিয়মিতভাবে প্রতিটি রোগী স্পর্শ করার
ক্ষেত্রে প্রতিবার নিয়মানুযায়ী হাত পরিষ্কার করার ব্যাপারে সর্তক থাকতে হবে। রোগীর কল্যাণ
কামনা এবং আন্তরিক সেবার মনোভাব গুরুত্বপূর্ন। তবে নিজের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা ভুলে
গেলে চলবে না।তাই সকলের কাছে আমার অনুরোধ আমাদের যার যে দায়িত্ব তা যথাযথভাবে পালন
করলে অনেক বিপদের হাত থেকে আমরা নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারব। ইনশাআল্লাহ্
কিডনীতে পাথর হলে সাথে সাথে অপারেশনের কথা চিন্তা না করে এর থেকে বিরত থেকে নিকটস্ত অভিজ্ঞ
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অথবা বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে যে
সকল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক কর্মরত আছেন তাদের পরামর্শ নিন। মানুষের সামান্যতম ভুলের
জন্য অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। আর এই ক্ষতির ভাব পরবর্তী বংশধরদের বয়ে বেড়াতে হয়।সর্বপরি
বলতে চাই। আল্লাহ মানব হিসাবে আমাদের সৃষ্টি করেছেন কারন আল্লাহর সৃষ্টির হক আছে। আর
মানুষ হিসাবে আমাদের হক অনেক বেশি। আমাদের উচিত প্রত্যেকেই প্রত্যেকে সৃষ্টির হক
আদায় করা। তাহলেই আমাদের মানব সমাজ অনেক সুন্দরও সুখময় হবে এবং পরবর্তী বংশধররা সুখে
শান্তিতে পৃথিবীর বুকে বসবাস করতে পারবে। আমরা মানুষের কল্যানের জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ১
ঘন্টা চিন্তা করি। তাহলে আমাদের মানব সমাজ কলুষিত হবে না এবং আমরা ভবিষৎ প্রজন্মের
কাছে আর প্রশ্নবিদ্ধ থাকব না। ভাল কাজ করার জন্য আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
------ (পরিবর্ধিত, সংযোজিত, পরিমার্জিত ) --
ডাঃ এ.আর. খান , ডাঃ মোঃ আল মামুন, ডাঃ মোঃ তারিক জামিল